1

পুলিশের পোশাকে কলকাতায় ডাকাতি, ৩ বাংলাদেশি গ্রেফতার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পুলিশের পোশাকে ছদ্দবেশ ধারণ করে ডাকাতির ঘটনায় তিন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তাদের গ্রেফতার করে রাজ্যের বারুইপুর জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার তাদের স্থানীয় আদালতে তোলা হলে পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন আদালত।

রবিবার গভীর রাতে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার পূর্ব খুড়িগাছির নেতাজিনগর আমবাগান এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী অরূপ দত্তের বাড়িতে একদল ডাকাত লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ। জানা যায়, ডাকাতরা সংখ্যা প্রায় দশ থেকে বারো জন ছিল। এর মধ্যে একটি দল নিজেদেরকে পুলিশ সদস্য বলে পরিচয় দিয়ে ওই বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বাকিরা বাড়ির বাইরে অবস্থান করে নজরদারির কাজ করে। ডাকাতদলের কাছে খবর ছিল বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবসায়ী অরূপ দত্তের কাছে সোনার বিস্কুট রয়েছে। আর সেই লোভেই ওই রাতে তার বাড়িতে হানা দেয় তারা। যদিও বাড়ির মালিক বোঝানোর চেষ্টা করেন তার কাছে এমন কিছু নেই। যদিও তারা ওই বাড়ির ঠাকুর ঘরে প্রবেশ করে ঠাকুরের গায়ে থাকে গহনা, নগদ অর্থসহ বেশ কিছু জিনিস নিয়ে তারা পালায়।

ডাকাতি করে পালানোর সময় রবিবার রাতেই স্থানীয় বাসিন্দারা দিপু শর্মা নামে এক দুর্বৃত্তকে ধরে ফেলেন। এরপর শুরু হয় গণপিটুনি। পরে দিপুকে তুলে দেওয়া হয় বারুইপুর জেলা পুলিশের হাতে। তাকে জেরা করেই এই ঘটনায় তিন সন্দেহভাজন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হল রেজাবুল শেখ, মামন শেখ ও সবুজ শেখ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় পুলিশের পোশাক, ছুরি, ৩ রাউন্ড গুলি, গহনা ও কয়েক হাজার রুপি। এদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে ডাকাতদলের মূল চক্র হল বাংলাদেশের কুখ্যাত অপরাধী রেজাউল শেখ। এর আগেও কলকাতার একটি জায়গায় ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় সাত বছরের কারাগারের সাজাও ভোগ করতে হয় তাকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগেই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ কর রেজাউল। এরপর ভুয়া নথি দিয়ে নিজের নামে ভোটার কার্ড তৈরি করে ফেলে। বর্তমানে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ধপধপি এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে সে। এরই ফাঁকে ডাকাতসহ অন্য অপারাধ সংগঠিত করার জন্য একটি দলও তৈরি করে ফেলে।

গ্রেফতার হওয়া চারজনের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকীদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।

জেলা পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান জানান, ‘আমাদের হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে সন্দেহভাজন চারজনেরই টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন (টিআই) প্যারেড করানো হয়েছে। তাদেরকে হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদের কাছ থেকে লুটের সব জিনিসপত্র পুনরুদ্ধার করা, বাকীদেরকে আটক করাসহ তারা কোথা থেকে অস্ত্র পেল তা খতিয়ে দেখা হবে।’