1

পঞ্চগড়ে দেখা মিললো নতুন প্রজাতির সাপের

পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ঝলইশালশিরী ইউনিয়নের কালিয়াগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে নতুন প্রজাতির সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশে নতুন প্রজাতির এই সাপটির নাম রেড কোরাল কুকরি স্নেক (Red Coral Kukri/Aligodon Kheriensis Snake)| পঞ্চগড়ের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও উদ্ধারকারী মো. সহিদুল ইসলাম এই সাপটি উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করেছেন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভিআরসির প্রশিক্ষক বোরহান বিশ্বাস রোমন এই সাপটি চট্টগ্রাম নিয়ে যান।

সহিদুল জানান, গত ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি বোদা উপজেলার ঝলইশালশিরী ইউনিয়নের কালিয়াগঞ্জ বাজারের পাশের একটি উঁচু জায়গা এক্সকাভেটর দিয়ে কাটার সময় সাপটি বেরিয়ে আসে। তখন এলাকাবাসী আমাকে খবর দেয়। খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়ে আটটির মতো সাপ উদ্ধার করি। এর মধ্যেই ছিল রেড কোরাল কুকরি। সাপটি খননযন্ত্রের আঘাত পেয়েছে। আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। পরে রাজশাহী থেকে আসা ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রশিক্ষক বোরহান বিশ্বাস রোমনের কাছে সেটি হস্তান্তর করা হয়। অন্য সাপগুলোকে ফিরোজ আল সাবাহ ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অবমুক্ত করা হয়। সাপ গবেষক বোরহান বিশ্বাস রোমন জানান, সাপটি মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে। এটি বর্তমানে রাজশাহীতে সাপ উদ্ধার ও সংরক্ষণ কেন্দে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, উজ্জ্বল কমলা ও লাল প্রবাল রঙের এই সাপটি দেখতে মোহনীয়। সাপটি মৃদু বিষধারী ও অত্যন্ত নিরীহ। এই সাপটি পৃথিবীর দুর্লভ সাপদের একটি। হিমালয়ের পাদদেশের দক্ষিণে ৫৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার এলাকায় দেখা যায়। পৃথিবীর ২১তম সাপটি মৃত অবস্থায় ও ২২তম সাপটি মারাত্মকভাবে আহতাবস্থায় পাওয়া গেছে। সর্বপ্রথম এই সাপের দেখা মেলে ১৯৩৬ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশে। ৮২ বছর পর ২০১৯ সালে আবার উত্তর প্রদেশের খেরি জেলায় দেখা গিয়েছিল আরেকটি। সাপটি নিশাচর এবং বেশির ভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। সম্ভবত মাটির নিচে কেঁচো, লার্ভা, পিপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবন ধারণ করে।

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ফটোগ্রাফার ফিরোজ আল সাবাহ জানান, সব বন্যপ্রাণীসহ এমন দুর্লভ প্রজাতির সাপ আমাদের অমূল্য সম্পদ। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সচেতন হওয়াসহ বন্যপ্রাণীর আবাস ধ্বংস বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।