বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৪ অপরাহ্ন




নারীর সঙ্গে জামালপুরের ডিসির অনৈতিক ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

জামালপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৯

জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর ও একজন নারীর ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও নিয়ে সর্বমহলে তোলপাড় চলছে। নিন্দা ও ধিক্কারের ঝড় উঠেছে সর্বত্র। তবে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর দাবি করেছেন, ভিডিওটি বানানো।

খন্দকার সোহেল আহমেদ নামের একটি আইডি থেকে ওই ভিডিও পোস্ট হওয়ার পর প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, সামাজিকসহ নানা মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। বিষয়টি টক অব দ্য জামালপুরে পরিণত হয়েছে।

৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর তার অফিসের গোপনীয় কক্ষের বেডরুমে তার অফিসের এক নারী কর্মচারীকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাচ্ছেন। ব্যাপক আলোকিত ওই কক্ষের ইলেকট্রিক লাইটের সুইচ অফ করছেন তিনি। ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিচ্ছেন। একজন নারীর সাথে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর তার অফিসকক্ষের পাশের একটি বেডরুমে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে রয়েছেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরা টু থেকে ভিডিওটি ধারণ করা।

ওই জেলা প্রশাসকের নারী কেলেঙ্কারি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জামালপুরের নানা মহলে গুঞ্জন, কানাঘুষা চলছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসকের অধীন এক কর্মচারী জানান, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাত ১২টায় ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর নিজেকে বাঁচাতে তার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ এক সাংবাদিক নেতাকে নিয়ে রাতভর মিটিং করেন। ভোর ৬টায় মিটিং শেষে তারা জেলা প্রশাসকের বাসভবন থেকে বেরিয়ে যান।

এ ব্যাপারে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুর আড়াইটায় জামালপুর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে প্রেস ব্রিফিং করেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর। প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি দাবি করেন, তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ফেক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে ওই ভিডিও ভাইরাল করা হয়েছে।

ফেসবুক মেসেঞ্জারে ভাইরাল হওয়া ভিডিও প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে আইডি থেকে এই ভিডিও আপলোড করা হয়েছে, সেটা ফেক আইডি। ভিডিওটি এডিট করা বলে তিনি দাবি করেন। তখন সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, আপনার খাসকামরার ব্যাকগ্রাউন্ড, বেডকভার, কাপড়চোপড় হুবহু আপনার, এটা কীভাবে সাজানো হয়? এ প্রসঙ্গে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরা টু থেকে ধারণ করা ভিডিওতে আপনার চেহারা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করলেও তিনি কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। সাংবাদিকরা জানতে চান, অভিযোগটি আপনার বিরুদ্ধে, তাহলে কে তদন্ত করবে? উত্তরে তিনি জানান, এটি ইন্টারনাল বিষয়। অফিশিয়ালি এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর জামালপুরে যোগদান করেন ২০১৭ সালের ২৭ মে। যোগদানের কিছুদিন পর থেকেই তিনি তার অফিসকক্ষের পাশে ছোট্ট একটি কক্ষে ধূমপান ও ব্যক্তিগত সরকারি গোপনীয় বৈঠকের জন্য কক্ষটি ব্যবহার করে আসছেন। সম্প্রতি ওই কক্ষে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একটি খাট বসানো হয়েছে। তাতে বিশ্রাম নেয়ার মতো বালিশ, চাদর সবকিছুই আছে। সম্প্রতি ওই কক্ষে একাধিক নারীর যাতায়াতকে কেন্দ্র করে গোটা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সেখানে একজন নারীর সাথে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের অবৈধ মেলামেশার ভিডিওটি ফেসবুকে, ফেসবুক থেকে ডাউনলোড করে মেসেঞ্জারে, মোবাইল থেকে মোবাইলে এবং ইমেইেলে ছড়িয়ে পড়ায় আগে শোনা সেই গুঞ্জন শেষ পর্যন্ত বাস্তবে রূপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করছেন অনেকে।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765