1

টানা বর্ষণে তলিয়েছে চট্টগ্রাম, পাহাড় থেকে সরানো হচ্ছে বাসিন্দাদের

টানা ভারি বর্ষণে আজ সোমবার চট্টগ্রাম মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভারি বর্ষণের সঙ্গে জোয়ারের উজানো পানি যুক্ত হলে নগরীর অনেক এলাকা কোমর সমান পানির নীচে তলিয়ে যায়।

এদিকে, জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারীদের সরাতে চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রশাসন দুর্যোগ মোকাবেলায় ৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে এবং আজও আরো ৩৬টি পরিবারকে পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়েছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়। চট্টগ্রামে আজ বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টিপাত ১৮৫ মিলিমিটারেরও বেশি রেকর্ড করা হয়েছে।

আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, নাসিরাবাদ সিডিএ এভিনিউর বিভিন্ন অংশ, হালিশহর আবাসিকের বিভিন্ন সড়ক, পাঁচলাইশ, চকবাজার, মুরাদপুর, শোলকবহর, চান্দগাঁওসহ নগরীর প্রায় ৫০টি নীচু এলাকার সড়ক, ভবনের নীচতলা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরসমূহ তলিয়ে যাওয়ায় জনাসাধারণ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে বৃষ্টির সঙ্গে জোয়ারের পানি উজিয়ে আসায় বহু দোকানপাট, আড়তে ও রাস্তাঘাটে পানি ঢুকে পড়ায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি ও আশেপাশের এলাকাতেও অনুরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রবল বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে খোলা পণ্যের খালাস-লাইটারিং জাহাজসহ দুইদিন ধরে বন্ধ রয়েছে বলে জানায় বন্দর ও লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সূত্রগুলো।

নগরীর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের বহদ্দরহাটমুখি অংশে দিনভর প্রায় ৬ শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও আরাকান সড়ক ও বাকলিয়ার বিভিন্ন সড়কে পানি ওঠায় সেসব স্থানে ভয়াবহ যানজট কবলিত হয় বিভিন্ন রুটের শত শত যানবাহন। এই পরিস্থিতিতে কোমর সমান পানি কবলিত বিশ্বরোডের মুরাদপুর অংশ ভয়াবহ যানজটে নিশ্চল হয়ে গেলে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারেও তার প্রভাব পড়ে।

বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে দুয়েকটি ফ্লাইটের চলাচলে বিলম্ব ঘটে। তবে সার্বিকভাবে এই বিমান বন্দরে বিমান চলাচল স্বাভাবিক ছিল বলে এয়ারপোর্ট ম্যানেজার উইং কমান্ডার সারোয়ার-ই-জামান জানান।

ওয়াসার পাইপ বসানোর খোঁড়াখুঁড়ির কারণে বিনষ্ট হওয়া বিভিন্ন সড়কের অবস্থা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে বৃষ্টির পানিতে। বর্ষাতেই কেনো এই খোঁড়াখুঁড়ি এই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন নাগরিক ফোরাম থেকে। আজ চট্টগ্রাম ওয়াসা ভবনের নীচ তলাতেও পানি ঢুকে যায়। ফলে সৃষ্টি হয় অচলাবস্থার। সেখানকার কর্মকর্তারা জানান, তারা ওয়াসা ভবন থেকে পানি সরাতে পাম্প ব্যবহার করছেন। নগরীর রাস্তায় পানি ও গর্তের কারণে বাসটেম্পু চলাচল কম থাকায় চাকরিজীবী শিক্ষার্থীরা পড়েছেন অশেষ কষ্টে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত রয়েছে। আবহাওয়া অফিস আজ সোমবার সকাল ১০টায় নতুন করে ভারিবর্ষণ অব্যাহত থাকার সতর্কতা দিয়েছে।