1

ছেলেধরা সন্দেহে মারপিটের ঘটনায় প্রধান শিক্ষক গ্রেফতার

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদে ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সংযোগ প্রদানকাজে নিয়োজিত এক টেকনিশিয়ানকে ছেলেধরা সন্দেহে মারপিট করে গুরুতর আহত করার অভিযোগে কামাল হোসেন নামে এক প্রধান শিক্ষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার কামাল হোসেনর চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

জানা যায়, অপটিক্যাল ফাইবার টানার কাজে নিয়োজিত ইউনুস আলী হাওলাদার উপজেলার কোষারানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ হতে খনগাও ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার টানার লক্ষ্যে সার্ভে কাজের জন্য সোমবার সকালে উপজেলার চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন পাকা রাস্তায় যান। সেখানে সার্ভে কাজ করার সময় চাঁদপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন টেকনিশিয়ান ইউনুস আলীকে জিজ্ঞাসা করেন তার বাড়ির কথা। এ সময় ইউনুস তার বাড়ি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানার আদাখোলা গ্রামে জানালে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন টেকনেশিয়ান ইউনুসকে ছেলেধরা সন্দেহে আটক করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে লোহাগাড়া বাজারে নিয়ে যান। সেখানে ইউনুসকে ছেলেধরা বলে জনতার হাতে তুলে দেন। এ সময় ইউনুসকে পেটাতে পেটাতে লোহাগাড়া কলেজ মাঠে নিয়ে যায় জনতা। সেখানে তাকে গণধোলাই দেওয়া হয়। খবরটি মুহুর্তে ছড়িয়ে পরলে কলেজ মাঠে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে এবং তারাও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এ সময় ইউনুসের পকেটে থাকা ৩৫ শ’ টাকা ও ওয়ালটন মোবাইল ছিনিয়ে নেয় জনতা। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের উপরেও চড়াও হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এডব্লিউএম রায়হান শাহ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে ইউনুসকে উদ্ধার করে পীরগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

পুলিশ জানায়, আহত টেকনেশিয়ান ইউনুস ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার আদাখোলা গ্রামের আব্দুর রহমান হাওলাদারের ছেলে। খবর পেয়ে ব্রডব্যান্ড সংযোগ কাজে নিয়োজিত ওই কোম্পানির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। মারপিটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনসহ ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে ইউনুস আলী বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় রাতেই মামলা করেন। মামলার পর রাতেই প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পীরগঞ্জ থানার ওসি মো.বজলুর রশিদ জানান, ছেলেধরা সন্দেহে পিটুনির অভিযোগে মামলা হওয়ায় প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এডব্লিউএম রায়হান শাহ বলেন, ইউনুস এর আগেও এই উপজেলায় কাজ করেছেন। গুজবে কান দিয়ে মানুষ তাকে মারপিট করেছে। এটা কাম্য নয়। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।