1

ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ায় মাদারাসা শিক্ষক আটক

পাবনার চাটমোহরে নবম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে আবদুল কুদ্দুস নামে এক মাদরাসা সহকারী শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। কিছুদিন ধরে অভিযুক্ত ঐ শিক্ষক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব ও যৌন হয়রানির চেষ্টা করে আসছিলেন বলে জানা গেছে।

বিষয়টি অভিভাবক ও এলাকাবাসী জানার পরে ঐ মাদরাসায় গিয়ে বিক্ষোভ করলে মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

অভিযুক্ত শিক্ষক উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বাঘলবাড়ি-কৈ বহুমুখী দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ও একই ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের মৃত মছির ফকিরের ছেলে। রাতেই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা।

এলাকাবাসী ও থানা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল কুদ্দুস বেশ কিছুদিন হলো একই মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রীকে নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। মেয়েটি লোক লজ্জার কাউকে কিছু না বলে বিষয়টি গোপন করতে থাকে। গত রবিবার ফুলের গাছ নেওয়ার বাহানা করে ওই ছাত্রীর বাড়িতে যান আবদুল কুদ্দুস। এ সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। পরে ওই ছাত্রী তার শিক্ষককে ঘরে বসতে দিয়ে নাস্তা খেতে দেয়। নাস্তা খাওয়ার সময় অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে যৌন হয়রানির চেষ্টা করে। পরে মেয়েটি এই ঘটনার বিষয়ে তার পরিবারকে জানায় এবং সোমবার মাদরাসা সুপার আবদুস সামাদ আজাদী এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মৌখিক অভিযোগ দেয়। কিন্তু অভিযুক্ত ওই শিক্ষক মাদরাসা সুপারের নিকট আত্মীয় হওয়ায় বিষয়টি ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন এবং কাউকে না জানিয়ে মঙ্গলবার সকালে মাদরাসায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে ঘরোয়াভাবে বিষয়টি আপস মীমাংসা করার চেষ্টা করেন।

এদিকে বিষয়টি এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে উত্তেজনা শুরু হয়। মঙ্গলবার সকালে সাধারণ মানুষ এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করে মাদরাসার সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে অবস্থা বেগতিক দেখে মাদরাসা সুপার পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে থানায় আনে। রাতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার পরে বুধবার সকালে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।

ঘটনার ব্যাপারে মাদরাসা সুপার আবদুস সামাদ আজাদী বলেন, ওই ছাত্রীর অভিযোগ পাওয়ার পর ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে মাদরাসার সামনে এলাকাবাসীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করলে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় আনা হয়। রাতে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার সকালে তাকে পাবনা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।