1

চিতলমারীতে ‘হোয়াইট স্পট ও রেড’ ভাইরাসের আক্রমনে সর্বশান্ত চিংড়ি চাষি

বাগেরহাটের চিতলমারীতে হঠাৎ করে ঘেরের বাগদা চিংড়ি মারা যাওয়ায় চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মাছ মরার কারণ হিসেবে তারা ‘হোয়াইট স্পট ও রেড’ ভাইরাসকে দায়ী করছেন। এই ভাইরাসের আক্রমনে ঋনগ্রস্থ কয়েক হাজার চাষি সর্বশান্ত হতে চলেছেন। সোমবার দুপুরে উদ্বেগের সাথে এমনটাই জানিয়েছেন খিলিগাতী-ডুমুরিয়া গ্রামের মৎস্য চাষিরা। অথচ এ সংত্রান্ত কোন খবর জানেন না চিতলমারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা।

চিতলমারী মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মোট চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা ১৬ হাজার ৭১০ টি। যার মোট আয়তন ১৬ হাজার ৮৩৩ একর। এরমধ্যে ১৩ হাজার ৭৫৮ টি ঘেরে গলদা ও ২ হাজার ৯৫২ টি ঘেরে বাগদা চিংড়ির চাষ হয়। এখানের চাষিরা বছরে ৫৮১ মেট্রিকটন বাগদা ও ২ হাজার ৬৫০ মেট্রিকটন গলদা চিংড়ি এবং বিপুল পরিমান সাদা মাছ উৎপাদন করে থাকেন। এখানে ৭ হাজার ৫০০ জন মৎস্য চাষি ও ২ হাজার ৭০২ জন মৎস্যজীবি রয়েছেন। সেই সাথে এই চিংড়ি শিল্প ও মাছ চাষের সাথে এ অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের ভাগ্য জড়িত রয়েছে।

এ বছরের শুরুতে ঋণগ্রস্থ চাষিরা বাগদা চিংড়ির উৎপাদন দেখে অনেকটা আশায় বুক বেধে ছিলেন। মাছ বিক্রি করে তাদের ধারদেনা মিটবে। কিন্তু হঠাৎ করে ঘেরের উৎপাদিত বাগদা চিংড়ি মারা যাওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের বিকাশ বাড়ই, বিধান মন্ডল, লিটন বাছাড়, বিমল মন্ডল, শ্রীরামপুরের জাকির মোল্লা, তারাপদ ব্র², পারডুমুরিয়ার নেয়ামুল শেখ, উত্তম বাড়ই, রাসেল শেখ ও ঝালডাঙ্গার পিনাক ভক্তসহ অনেক চিংড়ি চাষি জানান, এ বছর তারা দেনায় দেনায় জর্জারিত হয়েও বড় আশা নিয়ে চিংড়ি মাছের চাষ শুরু করেছিলেন। মাছের উৎপাদনও ভাল হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে হোয়াইট স্পট ও রেড ভাইরাসে ঘেরের বাগদা চিংড়ি মরে যাওয়ায় তারা সর্বশান্ত হয়ে গেছেন। এ ঘটনার পরও তারা স্থানীয় মৎস্য অফিসের কোন পরামর্শ বা সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ তুলেছেন।

এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মোঃ জিল্লুর রহমান রিগান জানান, চিংড়ি মাছের হোয়াইট স্পট ও রেড ভাইরাস সম্পর্কে তার কাছে কোন তথ্য বা খবর নেই। তবে স্টক ও অক্সিজেন ফেলসহ নানা কারণে মাছ মরতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।