1

চলতি অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক ঋণ ২৬ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা

গেল অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ২৬ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। গত কয়েকটি অর্থবছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরও ব্যাংক থেকে আগের তুলনায় অনেক বেশি ঋণ নিতে হয়েছে সরকারকে। মূলত রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে থাকায় বিপুল অঙ্কের ঋণ নেওয়ার দরকার হয়েছে।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত আদায় হয়েছে মাত্র দুই লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতি থাকলেও পদ্মা সেতু, বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব কারণে সঞ্চয়পত্রের বিপুল বিক্রির পরও ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হয়েছে।

জানা গেছে, গত অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের মধ্যে ১০ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দিয়েছে ১৬ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। সরকারের ঋণের একটি অংশ বাংলাদেশ ব্যাংক সরবরাহ না করলে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট আরও বাড়ত। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাতে গত জুন শেষে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩৩ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা। আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ৮০ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ১৯ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সরকার নিয়েছিল মাত্র ৯২৬ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছিল, পরিশোধ করেছিল তার চেয়ে ১৮ হাজার ২৯ কোটি টাকা বেশি। তার আগের অর্থবছর নিয়েছিল মাত্র চার হাজার ৮০৭ কোটি টাকা। আর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকারের ঋণ কমেছিল ছয় হাজার ৮৭০ কোটি টাকা।

সংশ্নিষ্টরা জানান, ব্যাংক থেকে গত জুনে বেড়ে এখন ৮ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়েছে সরকার। অর্থবছরের শুরুর দিকে যেখানে সুদহার ছিল ৭ শতাংশের নিচে। অথচ কয়েক বছর ধরে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিতে সরকারকে ব্যয় করতে হচ্ছে ১১ দশমিক শূন্য ৪ থেকে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ পরিস্থিতিতে সঞ্চয়পত্র থেকে এবারে ঋণ কমাতে চাইছে সরকার। এ লক্ষ্যে এক লাখ টাকার বেশি মূল্যমানের সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক করাসহ নানা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।