1

গরম আর বৃষ্টিতে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের ভয়

এই সময়কার আবহাওয়ায় শরীর কখনো ঘামে ভিজে থাকে নয়ত বৃষ্টির পানিতে। ফলে ত্বকে কিছু ছত্রাক সংক্রমণ (ফাঙ্গাল ইনফেকশন) দেখা যায়।

ফাঙ্গাল ইনফেকশন কী?

ফাঙ্গাল ইনফেকশন সংক্রামক রোগ। আমাদের চারপাশে এমন অনেক রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে, যা খালি চোখে দেখতে পাই না। এসব রোগ-জীবাণু আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে এবং শরীরের যেকোনো অংশকে আক্রান্ত করে। দ্রুত এ রোগের চিকিৎসা না নিলে ধীরে ধীরে শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে বর্ষাকালে ত্বকে ফাঙ্গাল আক্রমণ বেশি হয়। তাই শরীরের ত্বকে যেকোনো ধরনের রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, তারা বেশি ফাঙ্গাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়। ফাঙ্গাল ইনফেকশনের রকমভেদ রয়েছে। যেমন : টিনিয়া পেডিস (এথলেটস ফুট), টিনিয়া করপোরিস (দাদ রোগ), ওনিচোমাইকোসিস (পায়ের নখের ইনফেকশন), টিনিয়া ভর্সিকুলার (সরাসরি ত্বকে আক্রান্ত হলে) ইত্যাদি।

যে কারণে স্কিন ফাঙ্গাস হতে পারে

ফাঙ্গাস বা ছত্রাক সাধারণত সব সময় স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জন্ম নেয়। বর্ষাকালে এ রোগ বেশি হয়। আবার ঘর্মাক্ত শরীরে স্কিন ফাঙ্গাস হতে পারে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বসবাস করা, খালি পায়ে নোংরা স্থানে হাঁটাচলা ইত্যাদি কারণেও ত্বকে ফাঙ্গাস আক্রমণ করতে পারে। যাদের পা অতিরিক্ত ঘামে তাদের জুতো থেকেও ফাঙ্গাস আক্রমণ করতে পারে। মাথার ত্বকে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়।

লক্ষণ

ত্বক ধীরে ধীরে অস্বাভাবিকভাবে লাল হয়ে যাওয়া।

ত্বকে চুলকানি, জ্বালা-পোড়া ও অস্বস্তি বোধ হওয়া।

নখ বিবর্ণ ও হঠাৎ ভঙ্গুর হওয়া।

হাত ও পায়ের ত্বকে আক্রান্ত স্থানে প্রচুর চুলকানি বেড়ে যায়, ত্বক খসখসে ও চামড়া উঠে যায়।

আক্রান্ত স্থান থেকে অতিরিক্ত চুলকানির ফলে পানি বের হয়।

প্রতিরোধ

ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিরোধে শারীরিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন : গোসল করার পর বা ঘর্মাক্ত অবস্থায় এলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুকিয়ে নেওয়া। শরীরের খাঁজগুলোকে শুকনো রাখার চেষ্টা করা এবং ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরা। সুতির কাপড় দ্রুত ঘাম শুকিয়ে ফেললে ফাঙ্গাল বাসা বাঁধতে পারে না। ডায়াবেটিস থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখা।

চিকিৎসা

সুস্থতার প্রথম শর্ত হলো নিজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং ইনফেকশন দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। বিভিন্ন অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ, লোশন, ক্রিম, পেস্ট, শ্যাম্পু এবং পাউডার, নানাভাবে পাওয়া যায়। এগুলো যেখানে হয়েছে, সেখানে লাগাতে হয়। যদি শরীরের অনেকখানি জায়গাজুড়ে হয় এবং মাথায় ও নখেও দেখা যায়। তাহলে লাগানোর সঙ্গে খাওয়ার ওষুধও খেতে হবে। বেশি চুলকায় তাদের অ্যান্টি-অ্যালার্জি ওষুধ খেতে হবে। ফাঙ্গাল ইনফেকশনের চিকিৎসা খুবই ফলপ্রদ। অসুখ সেরে যাওয়ার দু-চার সপ্তাহ পর্যন্ত ওষুধ লাগাতে হবে, নতুবা অসুখটি আবার ফিরে আসবে।

ডা. এস. এম. আশিকুর রহমান এমবিবিএস (সি.ইউ) সিএমইউ (আল্ট্রা) পিজিটি (মেডিসিন) মেডিকেল অফিসার : এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকা মনোরোগ ক্লিনিক মেডিকেল টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যাটস, ঢাকা