1

খুলনা কর কমিশনারের ছেলের পাসপোর্ট জব্দ ও ডিএনএ টেস্টের আদেশ তিন দিনেও কার্যকর হয়নি

সহপাঠিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও অন্ত:সত্ত্বা করার মামলার আসামি খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিঞ্জন রায়ের আদালত কর্তৃক পাসপোর্ট জব্দ এবং শিঞ্জন ও ভিকটিমের ডিএনএ টেস্ট ও উভয়ের মোবাইল ফোনের কললিস্ট সংগ্রহ করার নির্দেশের পর তিনদিন পেরিয়ে গেলেও তা কার্যকর হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, শিঞ্জন রায়ের পাসপোর্ট জব্দ এবং শিঞ্জন ও ভিকটিমের ডিএনএ টেস্ট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট সংগ্রহের জন্যও আবেদন করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, গত বুধবার খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. শাহীদুল ইসলাম ধর্ষণ মামলার আসামি শিঞ্জন রায় এবং ভিকটিমের ডিএনএ টেস্ট ও উভয়ের মোবাইল ফোনের কললিস্ট সংগ্রহ করার আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. তৌহিদুল ইসলাম শিঞ্জনের পাসপোর্ট জব্দ, উভয়ের ডিএনএ টেস্ট ও মোবাইল ফোনের কললিস্ট সংগ্রহের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) তৌহিদুর রহমান বলেন, আসামি শিঞ্জন রায়ের পাসপোর্ট জব্দ এবং শিঞ্জন ও ভিকটিমের ডিএনএ টেস্ট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া উভয়ের মোবাইল ফোনের কললিস্ট সংগ্রহ করার জন্য খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনারের (সদর সার্কেল)
নিকট আবেদন করা হয়েছে। আসামি শিঞ্জন খুলনার কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়ের ছেলে।
এদিকে, গত মঙ্গলবার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি প্রোগামের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিঞ্জন রায়কে বিশ্ববিদ্যারয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে। গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়টির খুলনা শাখার উপাচার্য প্রফেসর ড. তারাপদ ভৌমিক বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সুনাম ও মর্যাদা ক্ষুণœ হওয়ায় নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিঞ্জনকে সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নওশের আলী মোড়লকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবি প্রোগামের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিঞ্জন রায় ও ওই মেয়েটি একসঙ্গে পড়াশুনা করেন। এক বছর আগে শিঞ্জন রায় তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এরপর বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে ভাড়া বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। তিনি বর্তমানে ৬মাসের অন্ত:স্বত্ত্বা। কিন্তু গত ১৪ আগস্ট পারিবারিকভাবে অন্য মেয়ের সঙ্গে শিঞ্জনের বিয়ে দেয়া হয়। এ খবর পেয়ে ওই ছাত্রী গত ১৫ আগস্ট রাত ১০টার দিকে নগরীর মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার ১৬নম্বর রোডে গিয়ে শিঞ্জন রায়ের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তার বিয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে শিঞ্জন তাকে সেখান থেকে জোর করে ইজিবাইকে তুলতে গেলে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। এ খবর পুলিশের কাছে পৌঁছালে তাদের দু’জনকে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়। গত ১৬ আগস্ট মেয়েটি শিঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এছাড়া খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এই মামলায় শিঞ্জন একদিনের রিমান্ড শেষে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।