1

খুলনায় সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় সড়ক

বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হচ্ছে খুলনা মহানগরী অধিকাংশ এলাকা। একদিকে বৃষ্টি, আরেকদিকে ভৈরব নদ ও রূপসা নদীর জোয়ারের পানিতে শহরের অলি গলি থেকে শুরু করে তলিয়ে যাচ্ছে প্রধান সড়কও। এতে যানজটের মাত্রা যেমন বাড়ছে তেমনি নর্দমার পানিতে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে নিয়মিত।

শনিবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া বৃষ্টিতে খুলনা নগরীর অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। মৌসুমের এ বৃষ্টিতে নগরীর প্রধান সড়কে হাটু পানি হলেও নিন্মাঞ্চল কোমর পানিতে তলিয়ে যায়। এতে বাসাবাড়ী, দোকান পাট, পথ ঘাট সর্বত্র পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। খুলনার অপেক্ষাকৃত নিম্নাঞ্চলে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কিছু রাস্তাঘাটে পানি জমে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। যথারীতি রিক্সা, ইজিবাইক চালকরা সুযোগ বুঝে ২/৩ গুন বেশি ভাড়া হাঁকে।

নগরবাসীরা মনে করছেন, বৃষ্টির পানি বেরিয়ে যাবার জন্য পানি নিস্কাশনের নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় নালা বন্ধ থাকা, সময়মত নগরীর ২২ খাল দখল উচ্ছেদ ও সংস্কার না করা, জলাধার দখল ও ভরাট থাকা, নদী দখল ইত্যাদি কারনে নগরীতে জলাবদ্ধতার মূল কারণ।

এছাড়া খুলনা ওয়াসার মেগা প্রকল্পের পানি সরবরাহের লাইন বসাতে বারংবার রাস্তা খোঁড়া-খুড়িতে নগরীর অধিকাংশ সড়কের বেহাল অবস্থা। মেরামত না করায় খানাখন্দ ও ছোট বড় গর্তের কারণে দুশ্চিন্তায় পরেছে নগরবাসী। বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া ভাঙা ফুটপাত আর খানাখন্দে ভরা রাস্তায় যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বৃষ্টিতে নগরীর বেশীরভাগ রাস্তা ভেঙ্গে খাল বিলের রূপ ধারণ করেছে।

খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, রাত ৯টা পর্যন্ত খুলনায় ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে খুলনা মহানগরী ও জেলার ৩টি উপজেলায় ময়ূর নদসহ মোট ২৬টি খালে ৪৬০ জন দখলদার ও ৩৮২টি অবৈধ স্থাপনা চূড়ান্তভাবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। পানি নিষ্কাশনে প্রয়োজনীয় ভূমি, নদী ও খালগুলোর সীমানা নির্ধারণ, যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও অবৈধ দখলমুক্ত করাসহ পানি চলাচল নিশ্চিত করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে বলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, খুলনা নগরী ও আশপাশের নদী খাল দখলদারদের বিষয়ে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে। কর্মকর্তাদের নির্দেশ পেলেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হবে। এ সংক্রান্ত সকল প্রস্তুতিও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আশা করছি খাল ও নদীর দখল উচ্ছেদ হলে খুলনার জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান হবে।