1

খুলনায় ‘ডাক্তার গড়ার কারিগর’ গ্রেফতার

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কারসাজির অভিযোগে খুলনার থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের মালিক কথিত ‘ডাক্তার গড়ার কারিগর’ ইউনুচ খান ওরফে ডাঃ তারিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি নিজেকে ডাক্তার গড়ার কারিগর হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর সিমেট্রি রোডে অবস্থিত কোচিং সেন্টারে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ ইমরান হোসেন খান এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ডাক্তার তারিনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া কোচিং সেন্টারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও কম্পিউটারের হার্ডডিক্স জব্দ করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি গত কয়েক বছর ধরে মেডিকেল কলেজে ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও আওয়ামীপন্থী চিকিৎসক নেতা হওয়ার সুবাদে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তার সাথে কারসাজির মাধ্যমে ভর্তি বাণিজ্য করে আসছেন। সূত্র অনুযায়ি, এই কোচিং সেন্টার থেকে গত বছর মোট ২৭৩ জন শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন সরকারি মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ১৮ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং ৮৬ জন ঢাকার অন্য চারটি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এর আগের বছর কোচিং সেন্টারটি থেকে বিভিন্ন মেডিকেলে ২৬৪ জন ভর্তি হয়েছিলেন। এই কোচিং সেন্টার ভর্তি বাণিজ্যের মাধ্যমে মেধাহীন, অযোগ্য ছাত্রছাত্রীদের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ করে দিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে জনপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা করে নিয়ে এই ভর্তি বাণিজ্যের মাধ্যমে বছরে শতকোটি টাকার বেশি অবৈধ লেনদেন হয়ে থাকে। সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে এসেছে, থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগসাজশ করে একশ্রেণির শিক্ষার্থীকে সরকারি মেডিকেলে ভর্তি করার জন্য চুক্তি করে।
খুলনা শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অলি গলি ও প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে থ্রি ডক্টরসের পোস্টারে সয়লাব। ওই সব পোস্টারে কোচিং সেন্টারের মালিক ডা. তারিমের ছবি ছাপানো। ছবির নিচে লেখা ‘ডাক্তার বানানোর কারিগর’। ১৮ বছরে তাদের কোচিং সেন্টারের ৪ হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। গত বছর কেবল সরকারি মেডিকেলেই ভর্তি হন ২৭৩ জন বলে লেখা রয়েছে।

খুলনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডা. তারিমের হাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও এ শহরের চিকিৎসাব্যবস্থা অনেকটা জিম্মি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, খুলনায় মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় যাঁরা পরিদর্শক থাকেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ডাঃ তারিমের ঘনিষ্ঠ। তাঁরা পরীক্ষার হলে তাঁদের শিক্ষার্থীদের সঠিক উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করেন।
ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ইমরান হোসেন খান বলেন, এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধসহ সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে অভিযান চালানো হয়েছে।