1

খুলনার সুরখালি ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ হাদী সরদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ড সদস্যরা। ইউএনও অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লিখিত অভিযোগে তারা জানিয়েছেন, ইউপি চেয়ারম্যান পরিষদের সভায় সদস্যগনের হাজিরা খাতায় সভা চলাকালীন আগে ভাগে স্বাক্ষর নিয়ে ইচ্ছামত রেজুলেশন লিখে থাকেন। পরে রেজ্যুলেশনকে কাজে লাগিয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে সরকারী টাকা আত্মসাত করে চলেছেন। যার দায়ভার সকল ইউপি সদস্যদের উপর পড়ছে।
ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বি,এম মাসুদ রানা জানিয়েছেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কোন কাজ করা হয়নি। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ইউনিয়নের সুন্দরমহল খেয়াঘাট পাকা করনের নামে ২ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। সেখানে কোন কাজ করা হয়নি। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদে একটি প্রিন্টার মেশিন কেনার জন্য বরাদ্দের ২০ হাজার টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে সুখদাড়ায় ইটের সোলিং নির্মাণ কাজে ১ লাখ টাকা, গাওঘরা শুকুর শেখের বাড়ি হতে ফারুক সাহেবের বাড়ির ইটের সোলিং নির্মাণ কাজে ৩ লাখ টাকা, সুখদাড়া পূর্বপাড়ায় ইটের সোলিং নির্মাণ কাজের ১ লাখ টাকা তিনি আত্মসাত করেছেন। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের এলজিএসপি প্রকল্পের ভগবতীপুর শ্রী শ্রী হরিচাঁদ মন্দিরের সামনে ব্রিজ নির্মাণ কাজের বরাদ্দ ৭ লাখ টাকা তিনি কোন কাজ না করেই আত্মসাত করেছেন।
ইউপি সদস্য মোঃ জাহিদুর রহমান শেখ ও স্বপ্না রানী রায় অভিযোগ করেন, একই রাস্তায় ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে চেয়ারম্যান কৌশলে অর্থ আত্মসাত করছেন। তারা জানিয়েছেন, সুন্দর মহল খেয়াঘাট পাকা করন ও পিচের রাস্তা পর্যন্ত ইটের সোলিং সংস্কারে ৬ লাখ টাকা, গাওঘরা গ্রামের চাঁন্দারডাঙ্গা হাবিবুর শেখের বাড়ি হতে রকিবের বাড়ি পর্যন্ত ইটের সোলিং নির্মান কাজের ৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। একই স্থানে ভিন্ন নামে চলতি বছরও প্রকল্প চলমান দেখানো হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে আরও জানা গেছে, ইউপি অফিস ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ক্ষমতা বৃদ্ধি, জন সুরক্ষা ও পারস্পারিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা, সুরখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট প্রকল্পের ২ লাখ টাকা তার পকেটে গেছে। এছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে কাবিখা প্রকল্পের ১০ টন চাল কাজ শুরুর আগেই বিক্রি করে আত্মসাত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
একই অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) বরাদ্দকৃত সমুদয় টাকা সংরক্ষিত আসনের সদস্য সাহারা রফিকের সাথে যোগসাজসে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বাইচের নৌকা ক্রয়ের নাম করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাদী সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কয়েক জন সদস্য আমার কাছে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে বিরোধীতায় নেমেছেন। তারা যে সব প্রকল্পের নামে অভিযোগ এনেছেন সেসব প্রকল্পের কিছু কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এছাড়া বাকি প্রকল্পের কাজ চলমান আছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ জিয়াউর রহমান বলেন, সুরখালি ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ আমার দপ্তরে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।