1

দাকোপে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলেদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ

খুলনার দাকোপ উপজেলার বানিয়াশান্তা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায়ের বিরুদ্ধে জেলেদের নামে বরাদ্দকৃত অক্টোবর মাসের চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) ইউনিয়নের কার্ডধারি জেলেরা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে খুলনা বিভাগীয় মৎস্য দপ্তরের উপ-পরিচালক বরাবর চাল আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগে জেলেরা জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান নিবন্ধিত কার্ডধারি জেলেদের চাল তুলে নিয়ে আত্মসাত করেছেন। ওই ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১০৭ জন। তাদের প্রত্যেককে ২০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ৪ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলেরা তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করলেও চেয়ারম্যান তা আমলে নেয়নি। পরে ১৭ জন জেলে স্বাক্ষর করে খুলনা মৎস্য দপ্তরের উপ-পরিচালক বরাবর অভিযোগ করেছেন।
এছাড়া ওই উপজেলার অন্য ৮টি ইউনিয়নের জেলেরাও চাল না পাওয়ায় গনমাধ্যম কর্মীদের সামনে অভিযোগ তুলে ধরেছেন।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দাকোপ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে এক হাজার নিবন্ধিত জেলেদের নামে অক্টোবর মাসে ২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ মাসের ১৬ তারিখে চাল বিতরণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কয়েকটি ইউনিয়নের জেলেরা এখনও চাল পাননি বলে জানা গেছে। বাজুয়া ইউনিয়নের জেলেরা জানিয়েছেন, গত ২৫ অক্টোবর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদেরকে চাল দেওয়া হয়েছে। তবে কার্ডধারি জেলেদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন চাল বিতরণ কবে হয়েছে তা তারা জানতে পারেননি।

বানিয়াশান্তা ইউনিয়নের কার্ডধারি জেলে ইউছুফ হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার জেলে কার্ড থাকলেও কোনো চাল দেওয়া হয়নি। আমরা শুনেছি চাল তুলেছেন চেয়ারম্যান। কিন্তু কেন বিতরণ করা হয়নি, তা জানি না। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কার্ড যাদের আছে, তারা চাল পাবে।’ একই ধরনের অভিযোগ করেছেন জেলে রাজু হাওলাদার, আনারুল ইসলাম, হাসেম গাজীসহ অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বানিয়াশান্তা ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য অভিযোগ করে বলেন, ‘চেয়ারম্যান নিজের লোক দিয়ে গুদাম থেকে কিছু চাল তুলে কয়েকজন জেলেকে ডেকে বিতরণ করেছেন বলে শুনেছি। সেখানে চাল কম পেয়ে জেলেরা হইচই করেছেন।’

দাকোপ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, বানিয়াশান্তা ইউনিয়নে ১০৭ জন নিবন্ধিত জেলের প্রত্যেকের নামে ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ২ টন ১৪০ কেজি চাল উত্তোলনও করেছেন চেয়ারম্যান। চাল কম দেওয়া হয়েছে বলে জেলেদের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার বিকালে তদন্ত করা হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায় চাল কম দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা অনেক। এবার ইলিশ প্রজনন মৌসুমে এর মধ্যে থেকে ১০৭ জনকে চাল দেওয়া হয়েছে। চাল বিতরণের সময় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমার বিরোধী পক্ষরা চক্রান্ত করে একটি বানোয়াট অভিযোগ ডিডি অফিসে পাঠিয়েছে। তদন্ত করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’