1

খাবারের পরিবর্তন বদলাতে পারে ভাষা ও কথা বলা!

আপনি কি জানেন যে আপনার ডায়েট আপনার ব্যক্তিত্বকেও প্রভাবিত করতে পারে? একটি বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, খাদ্যের পরিবর্তনের ফলে মানুষের ভাষার পরিবর্তন ঘটেছে। জার্মানির জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বে গবেষণায় খাদ্য ও খাওয়ার ধরণগুলোর পরিবর্তনের সাথে শব্দ এবং শব্দগুলোর ব্যবহার পরিবর্তনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ দলটি বায়োমেকানিক্স এবং ভাষাগত প্রমাণ ব্যবহার করে এই প্রথমবার মত খাদ্য এবং ভাষার সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।

গবেষকরা বলেন যে, হাজার হাজার বছর আগে কৃষির উত্থানের ফলে মানুষ ‘ফ’ এবং ‘ভ’ শব্দ ব্যবহার করতে শুরু করে। কৃষির আবির্ভাবের পরে মানুষ নরম খাবার খেতে শুরু করে, যার ফলে মানুষের দাঁত ও চোয়ালের ব্যবহার প্রভাবিত হয়। এটি এই শব্দগুলোর উৎপাদনকে আরও সহজ করে তোলে। ‘হিউম্যান সাউন্ড সিস্টেমস আর শেপড বাই পোস্ট-নিওলিথিক চেঞ্জেস ইন বাইট কনফিগারেশন’ (Human sound systems are shaped by post-Neolithic changes in bite configuration) শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, মানব ভাষাতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে সেই শব্দই বেশি যা উৎপাদন, অনুধাবন এবং শিখতে সহজতম।
গবেষণায় বলা হয়েছে, “১৯৮৫ সালে, ভাষাবিদ চার্লস হকেট প্রস্তাব করেছিলেন যে শিকারি-গোষ্ঠীর মধ্যে দাঁত এবং চোয়ালকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার ফলে নিচের ঠোঁট এবং উপরের দাঁত দিয়ে উচ্চারিত ব্যাঞ্জনবর্ণ (‘F’ এবং ‘v’ শব্দ) প্রয়োগে তাদের অসুবিধা হয়। তিনি অনুমান করেছিলেন যে এই শব্দগুলো মানুষের ভাষাতে সাম্প্রতিক যোগ হয়েছে।”

লেখক দামিয়ান ব্লাসি বলেন, জীববিজ্ঞান ও সংস্কৃতির মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া বিবেচনা করেই ভাষা ও কথা বলার বিষয়টি বুঝতে হবে। তিনি বলেন যে, দাঁত নির্দিষ্টভাবে ভাষাতে পরিবর্তন সূচিত করে না। খাদ্যের পরিবর্তনের কারণে দাঁতের পরিবর্তনের ফলে ‘f’ এবং ‘v’ শব্দের উৎপত্তি হয়।

গবেষকরা ব্যাখ্যা করেছেন যে মানুষটি উল্লম্ব এবং অনুভূমিক ওভারবাইট সহই জন্মগ্রহণ করে এবং প্যালিওলথিক যুগে মানুষ শক্ত, রান্না না করা খাবার খেত। কিন্তু কৃষির আবিষ্কারের পরে খাদ্যশস্য, ছানার মতো নরম খাবারের ব্যবহার বাড়ল। গবেষণায় বলা হয়েছে যে, “আমাদের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে প্রাগৈতিহাসিক যোদ্ধাদের সমসাময়িক সমাজ থেকে শুরু করে রূপান্তর মানুষের ভাষা যন্ত্রের উপর প্রভাব।