খুলনার কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাথে উপজেলা ছাত্রলীগের মতনৈক্য দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে উভয়পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগ ইউনিয়ন কমিটি ভেঙে দেওয়ার পর পরই জেলা ছাত্রলীগ প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা বহাল রাখার ঘোষনা দেয়। এতে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের মাঝে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, গত বুধবার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ শরিফুল ইসলাম টিংকু ও সাধারণ সম্পাদক এস এম হাদিউজ্জামান রাসেলের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৭টি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়।
উপজেলা সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংগঠনকে গতিশীল ও মডেল ছাত্রলীগ হিসাবে পরিণত করতে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। একই সাথে ইউনিয়ন কমিটিতে পদ প্রত্যাশী নেতা কর্মীদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ জীবন বৃত্তান্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক বরাবর জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
এর কয়েক ঘন্টা পর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পারভেজ হাওলাদার ও সম্পাদক ইমরান হোসেন স্বাক্ষরিত পাল্টা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় জেলার আওতাধীন কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় কোন কারণ ছাড়াই ইউনিয়ন কমিটির বিলুপ্তি ঘোষণা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। এমতাবস্থায় কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদকের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সেই মর্মে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদক বরাবর কারণ দর্শানোর জন্য বলা হলো। অন্যথায় কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই সাথে কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন ৭ টি ইউনিয়নের কমিটি পূনর্বহাল করা হলো।
এদিকে জেলা ছাত্রলীগ ও উপজেলা ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্তে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছেন সাধারণ নেতা কর্মীরা। তারা জানিয়েছেন, জেলা ছাত্রলীগের সাথে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠণ নিয়ে আগেই দুরুত্ব তৈরী হয়েছে। তারই প্রভাব পড়ছে এখন।
কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেতকাশি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিনুল আলম বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এক তরফা সিদ্ধান্তে ইউনিয়ন কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদকের স্বেচ্ছাচারি মনোভাবে একাধিক গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ শরিফুল ইসলাম টিংকু জানিয়েছেন, ইউনিয়ন কমিটিগুলো মেয়াদোত্তীর্ন ও অছাত্রদের দখলে থাকায় ভেঙে দেওয়া হয়। আমরা চেয়েছি একটি মডেল ছাত্রলীগ উপহার দিতে। জেলা ছাত্র লীগের হস্তক্ষেপ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে চাননি।
সূত্র অনুযায়ি, গত ২ জুন সালাউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি ও সোহেল রানা সৌরভকে সাধারণ সম্পাদক করে কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে খুলনা জেলা ছাত্রলীগ। এর ২২ দিনের মাথায় ওই কমিটি বাতিল করে শরিফুল ইসলাম টিংকুকে সভাপতি ও হাদিউজ্জামান রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ।