1

কাশ্মীর নিয়ে বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ

কাশ্মীরের দ্রুত অবনতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) জরুরি বৈঠক বসছে।

শুক্রবার চীন ও পাকিস্তানের অনুরোধে এ বৈঠক হচ্ছে বলে কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে।

কাশ্মীর নিয়ে ভারতের বিতর্কিত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের আপত্তি এবং এ ব্যাপারে জাতিসংঘে আলোচনার ব্যাপারে পাকিস্তানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।

রাশিয়া বলেছে, পাকিস্তান ও ভারত দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুক। পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন চায় দুই দেশের মধ্যে রুদ্ধদ্বার গোপন বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।

মঙ্গলবার রাতে ইসলামাবাদে ইস্যু করা এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি জানিয়েছিলেন, তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চিঠি লিখেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে বলে রেডিও পাকিস্তানকে জানান তিনি।

কোরেশি এ বৈঠককে পাকিস্তানের কূটনৈতিক বিজয় বলে মন্তব্য করেন। একই কথা বলেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজও। তারা বলেছে, শুক্রবার কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট জোয়ান্না রোনেকা।

এ ছাড়া কাশ্মীর ইস্যুতে পরিষদের অধিবেশন আহ্বানের অনুরোধ নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাসেক ক্যাপটোউইজের সঙ্গে। জবাবে পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দুটি দেশের মধ্যে বিরোধের সমাধান হতে পারে আলোচনার মাধ্যমে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই রকম কথা বলেছে।

এদিকে নিরাপত্তা পরিষদে চীন বলেছে, কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় রুদ্ধদ্বার বৈঠক হোক। অন্যদিকে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া দু’পক্ষকে খোলা মন নিয়ে বসে পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার পরামর্শ দিয়েছে।

গত ৫ আগস্ট ভারতের রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের ৭০ বছরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে নরেন্দ্র মোদির সরকার। সংবিধানের এই ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দুই ভাগ করা হয়।

৩৭০ ধারার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই স্বায়ত্তশাসিত ছিল জম্মু-কাশ্মীর। নিজস্ব সংবিধান, আলাদা পতাকা ও স্বতন্ত্র আইন বানানোর অধিকার ছিল ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের। তবে ৩৭০ ধারা বাতিলের ফলে এখন থেকে জম্মু-কাশ্মীরের পরিচিতি হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে।

ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইমরান খান। পার্লামেন্টে তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরে এখন জাতিগত নিধন চালানো হবে। ৩৭০ ধারা বাতিল করায় জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।