প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিরাময়ে বিশ্বজুড়ে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের চেষ্টার অন্ত নেই। করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণার অগ্রগতি হলেও এখনো তার কার্যকর প্রতিষেধক আবিষ্কার সম্ভব হয়নি। এবার এ ভাইরাস শনাক্তের কিট তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আরএনএ বায়োটেক লিমিটেডের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের দাবি ২০০ টাকায় এই ভাইরাস শনাক্তকরণ সম্ভব।
মঙ্গলবার রাতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা ফরহাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সিঙ্গাপুর এবং গণস্বাস্থ্যের একটি গবেষক দল মিলে এই কিট আবিষ্কার করেছে। দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার কিটের যে সংকট আছে, তা এই আবিষ্কারে দূর হবে বলে তারা আশা করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এ কিটটি বাজারজাত করার জন্য ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিদপ্তরের অনুমোদনের জন্য তারা আবেদন করেছেন। অনুমতি পেলে তারা এক মাসের মধ্যেই বড় উৎপাদনে যাবে।
প্রসঙ্গত, পৃথিবীর অন্যান্য দেশ তাদের প্রয়োজনে করোনা ভাইরাসের কিট তৈরি করলেও বাংলাদেশে এমন কাজ অন্য কেউ এখনো করেনি। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক লিমিটেড বাংলাদেশের মানুষের জন্য কোভিড-১৯ এর অস্তিত্ব প্রমাণ করার জন্য পিওসি কিট ডেভেলপ করার চেষ্টা করে আসছে।
গণস্বাস্থ্যের চিকিৎসা গবেষকেরা এই কিটের ডিজাইন এবং উৎপাদন করার কাজ করছে। এর আগে ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসের ডায়াগনোসিস কিট তৈরির সময় সিঙ্গাপুরে কাজ করেছেন ড. বিজন কুমার শিল। তিনিই গণস্বাস্থ্যের চিকিৎসা গবেষকদের অধিনায়কত্ব করছেন।
জানা যায়, এই কিট তৈরির জন্য বিএসএল টু-প্লাস ল্যাব তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। এর জন্যে রিএজেন্ট এবং ইকুইপমেন্টও সংগ্রহ করা হচ্ছে। গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেকের পক্ষে এ তথ্য নিশ্চিত করেন গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার।
তিনি বলেন, ‘এই কিট উৎপাদনে কাজ করেছেন ড. বিজন কুমার শিল, ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রঈদ জমির উদ্দিন এবং ড. ফিরোজ আহমেদ।’
ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার জানান, এ ধরনের কিট উৎপাদন করতে হাইটেক ল্যাব প্রয়োজন। ইতোমধ্যে গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক একটি হাইটেক ল্যাব স্থাপন প্রক্রিয়া শুরু করেছে।ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন পেলেই তারা প্রয়োজনীয় উপাদান আমদানি করবে। সব মিলিয়ে উৎপাদন করতে আমাদের এক মাস সময়ের প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে তারা ১০ হাজার ভাইরাস শনাক্তকরণ কিট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই কিট ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই ল্যাবটি ‘তৃতীয় স্তরের’ বায়োসেফটি হতে হবে।
ইতোমধ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে অনুমোদনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলেই এক মাসের মধ্যেই তারা বিপুল পরিমাণে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে।