1

এ কথা শুনলে জিয়া কবরে লজ্জায় কাত হয়ে শুয়ে পড়তেন: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচার কবরে শুনতে পেলে জিয়াউর রহমান নিজেই লজ্জায় কাত হয়ে শুয়ে পড়তেন।

মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্যানেল আলোচকের বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির উদ্যোগে ‘গৌরবের অভিযাত্রায় ৭০ বছর : তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্কটা শুরু হয় মূলত জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর। নিজে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এমন দাবি জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো করেননি।”

তিনি বলেন, “বিএনপি যেভাবে বলে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক, আমার মনে হয়- কবরের মধ্যে যদি জিয়াউর রহমান এমন মিথ্যাচার শুনতে পেতেন, তাহলে লজ্জা পেতেন।”

এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভির অনিন্দ্য প্যানেল আলোচকদের প্রশ্ন করেন- স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ বিভ্রান্তি ছড়ান। এবিষয়ে সরকারের কোনো পদক্ষেপ আছে কিনা?

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করা আর ঘোষণা দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়েছিলেন, সে ঘোষণা বহুজন পাঠ করেছেন। বেতারের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম পাঠ করেন তৎকালীন অবিভক্ত চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান।”

“এরপর চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতারা সিদ্ধান্ত নেন সেনাবাহিনীর অফিসার দিয়ে পাঠ করানোর। তখন জিয়াউর রহমানকে দিয়ে পাঠ করানো হয়” দাবি তথ্যমন্ত্রীর।

তিনি বলেন, “এছাড়া ২৬ মার্চ নিজের জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী নূরুল হক শহরের বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন। নূরুল হকের মতো আরও অনেক মানুষ সারাদেশে মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন তখন।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা এই বিতর্ক তৈরি করেছে, তারা ইতিহাস বিকৃত করতে চায়। তবে মানুষ এখন প্রকৃত ইতিহাস জেনে গেছে। এরপরও কেউ কেউ উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলার চেষ্টা করে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাহ বাঙালি ছিলেন না। তার অন্দর মহলের ভাষা ছিল ফার্সি ও উর্দু। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন বাঙালি জাতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।”

হাছান মাহমুদ বলেন, “বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাঙালিদের শাসন করার অধিকার পায় বাঙালি। এর আগে কখনো নিজেকে নিজে শাসন করার অধিকার পায়নি বাঙালি।”

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অসাধারণ নেতৃত্বে উন্নয়ন ও অর্জনের মাধ্যমে বিশ্বে বাঙালির পরিচয় বদলে দিয়েছেন। তিনি দেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।”

আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে আবারও পেছনে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক চক্রান্ত হয়েছে। জিয়াউর রহমান এবং এরশাদ- দুজনে মুদ্রার এপিঠ-ওপিট। তারা দুজনেই ছিলেন পাকিস্তানের পক্ষে।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খাঁন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।