1

‘একখান ঘর আর একটু ভাতা পাইলে ভালো হয়’

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী গ্রামের বাসিন্দা সখিনা বিবি। বয়স ১০৪ বছর। স্বামী আফেল উদ্দিন মারা গেছেন ১৯৭৩ সালে। ৪ ছেলে মেয়ে যে যার মত বিভিন্ন শহরে দিনমজুরি খেটে সংসার চালায়। বর্তমানে ওই গ্রামেই থাকেন তবে নিজের বলে কিছু নেই। দরিদ্র নাতি সবুজ শেখের ঘরে থাকেন।

সখিনা বিবি বলেন, ‘আমি বাবা ভিক্ষা করিনা। ভিক্ষা করা পাপ। তবে হাটার পথে পরিচিতজনেরা খুশি হয়ে কিছু দেয়। বেশী হাটতে পারিনা। মাথা ঘুরায়’। কোন সাহায্য পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সখিনা বিবি বলেন, ‘সরকারি সাহায্য কোনদিন পাইনাই। সরকারতো অনেক দেয় শুনি। আর কত দিবে। আমার কপালে নাই’। সাহায্যের প্রয়োজন কিনা জানতে চাইলে বৃদ্ধা সখিনা বিবি চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা যা দিবে তাতেই আমি খুশি। তয়, একখান ঘর আর একটু ভাতা পাইলে ভালো হয়’।

সখিনা বিবির বয়স শতবর্ষ পার হলেও স্মৃতিশক্তি, শ্রবন শক্তি ও দৃষ্টিশক্তি ঠিক আছে বলা যায়। নিজের থাকা খাওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকলেও গর্ভজাত সন্তানদের ভাবনা তাকে তাড়িয়ে ফেরে সর্বদা। সন্তানদের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমার পোলা মাইয়ারা মনে হয় কষ্টে আছে’।

অনুষন্ধানে জানা গেলো, সখিনা বিবি আসলেই সরকারি বা বেসরকারি কোন সাহায্য কোনদিন পাননি। তার কপালে জোটেনি বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফ বা বিশেষ ভিজিএফ’র কোন কার্ড। সবকিছুই তার ভাগ্যকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে অন্যথা।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান লাল আজ শুক্রবার বলেন, সখিনা বিবি বহু বছর এলাকায় ছিলোনা। তার আইডি কার্ড নেই। তাই তাকে বিধবা ভাতা দেওয়া যায়নি। তবে পরিষদে গেলে তাকে চাল দেওয়া হয়।

এ সম্পর্কে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। সখিনা বিবিকে খুজে বের করা হবে। আইডি কার্ড না থাকলে বিকল্প ব্যবস্থায় তাকে সাহায্যের আওতায় আনা হবে।