1

ইউটিউব থেকে কৃষকের আয় ২ লাখ রুপি!

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে বসবাসকারী দর্শন সিং কৃষিকাজ দিয়ে তার পেশা শুরু করেছিলেন। কিন্তু এখন কৃষিকাজ নয়, ইউটিউব থেকে মাসে তিনি আয় করছেন ২ লাখ রুপি। কৃষিভিত্তিক চ্যানেল হিসেবে তার চ্যানেলটি এরই মধ্যে জনপ্রিয় উঠেছে ইউটিউবে। মাত্র এক বছর আগে দর্শনের চ্যানেলটি যাত্রা শুরু করলেও এরই মধ্যে তাদের সাবস্ক্রাইবার হয়েছে ২০ লাখেরও বেশি। প্রতিদিনই দর্শনের চ্যানেলে দর্শকের সংখ্যা বাড়ছে।

কীভাবে একজন কৃষক হয়েও দর্শন সফল ইউটিউবার হলেন তা নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ আছে। জানা গেছে, হরিয়ানার এক কৃষক পরিবারে জন্ম দর্শন সিংয়ের। বংশ পরম্পরায় তিনিও চাষাবাদকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে পড়াশোনা শেষ করে তিনি তাদের ১২ একর জমিতে চাষাবাদের সিদ্ধান্ত নেন।

শুরু থেকেই চাষাবাদের ক্ষেত্রে দর্শনের নতুন কিছু করার চিন্তা ছিল। অন্যান্য কৃষক যখন চাষাবাদের ক্ষেত্রে রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, দর্শন তখন তার ২ একর জমিতে জৈব সার দিয়ে ফসল ফলানোর সিদ্ধান্ত নেন।

দর্শন জানান, প্রথমে পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর লক্ষ্যে অল্প জমিতে জৈব সার দিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন তিনি। তাহলে ইউটিউবার হলেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ইউটিউব চ্যানেল চালু করেছেন প্রয়োজনীয়তা থেকে।

২০১৭ সালে উপার্জন বাড়ানোর জন্য ডেইরি ফার্ম চালু করেন দর্শন। কিন্তু এই বিষয়ে তার কোনো প্রশিক্ষণ ছিল না। এ কারণে তিনি ডেইরি ফার্ম ও জৈব সার দিয়ে চাষাবাদের ভিডিও দেখতে শুরু করেন ইউটিউবে। কিন্তু কোনো ভিডিও তার সম্পূর্ণ মনে হচ্ছিল না।

দর্শন বুঝতে পারেন, কাজ করতে হলে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা আসল কৃষকদের কাছে যেতে হবে। এরপর তিনি বিভিন্ন কৃষকের কাছে পরামর্শ নিতে থাকেন। কৃষকদের কাছে শিক্ষা নিতে গিয়ে তিনি ভাবতে থাকেন এটা চাষাবাদের ক্ষেত্রে অন্যদের জন্যও উপকারী হবে। তার মতো এ রকম বহু কৃষককে সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। এটা চিন্তা করেই দর্শন সফল কৃষকদের কথা, চাষাবাদের পদ্ধতি নিজের মোবাইলে ভিডিও করতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে সেটা ইউটিউব চ্যানেলেও আপলোড করতে থাকেন।

দর্শন জানান, এভাবেই ‘ফার্মিং লিডার’ নামের চ্যানেলটির যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালে। চালু হওয়ার পর থেকে চ্যানেলটি ব্যাপক সাড়া তোলে দর্শকের কাছে। দর্শন বলেন, ‘দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে সপ্তাহে তিন থেকে চারটা ভিডিও পোস্ট করতে শুরু করি আমার চ্যানেলে। ছয় মাসের মধ্যে আমার চ্যানেল লাখের ওপর ভিউ হয়’। তিনি জানান, চাষাবাদের চেয়ে যখন ইউটিউবে আয় বেশি হতে থাকে তখন তিনি সেই কাজটাকেই প্রধান পেশা হিসেবে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে তার চ্যানেলে চাষাবাদের ওপর ৫০০টি ভিডিও আছে।

দর্শন এখন আর মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন না। এর পরিবর্তে অত্যাধুনিক ক্যামেরা কিনেছেন তিনি।