1

আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানা: তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আলোচিত আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানার ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে ‍পুলিশ ব্যুরো অব ইনভোস্টিগেশন (পিবিআই)।

শনিবার দুপুরে সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিআইবির আবুল হোসেন। তিনি সমকালকে জানিয়েছেন, সন্ত্রাস দমন আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

এতে আতিয়া মহলে বিস্ফোরণে নিহত নারী জঙ্গি মর্জিনার ভাবী আর্জিনা (১৯), আর্জিনার স্বামী জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৫) ও হাসান (২৬) নামে তিন জনকে আসামি করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের সিতাকুন্ডে সংঘঠিত একটি জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ এই তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গত জানুয়ারি মাসে আতিয়া মহল জঙ্গি আস্তানার মামলায় এদের ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

পিআইবির পরিদর্শক আবুল হোসেন জানান, এই তিনজন জঙ্গি দলের সদস্য এবং আতিয়া মহলে নিহত ৪ জঙ্গিকে তারা জঙ্গিবাদে উদ্ভুদ্ধ করে। এই ঘটনায় মোশরফ নামে আরেক জঙ্গির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তবে সে মৌলভীবাজারে জঙ্গিবিরোধী আরেক অভিযানে মারা গেছে।

আবুল হোসেন জানান, আতিয়া মহলে নিহত চারজনের মধ্যে দু’জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।

তিনি জানান, আতিয়া মহলে নিহত চারজনের মধ্যে সিতাকুন্ডের নুরুল ইসলামের মেয়ে মনজিয়ারা পারভীন ওরফে মর্জিনা ছাড়া অপর নিহত তামিম ফারাজি খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার বাবা ময়মনসিংহের আব্দুল বারি ফারাজির সঙ্গে ডিএনএ মিল পাওয়ার পর তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

প্রায় ২৯ মাস পর এই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও আতিয়া মহলে নিহত অপর দুই জঙ্গির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান চলাকালে বিস্ফোরণে চার জঙ্গির দেহের সিংহভাগ পুড়ে যায়। এতে তাদের চেহারা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বাকি দু’জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোর থেকে আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়ার পর অভিযান শুরু হয়। প্রথমে পুলিশ বাড়িটি ঘেরাও করে রাখার পর সোয়াডকে ডাকা হয়। আতিয়া মহলের বিভিন্ন ফ্ল্যটে নারী-পুরুষ-শিশু মিলে ৭৮ জন আটকা পড়লে সেনাবাহিনীর কমান্ডো দলকে ডাকা হয়।

সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ চলাকালে আতিয়া মহলের পার্শ্ববর্তী স্থানে পৃথক বিস্ফোরণে র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের তৎকালীন প্রধান, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৭ জন নিহত হন। এই ঘটনায় দায়ের হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় গত জুলাই মাসে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছেন একই তদন্ত কর্মকর্তা।