1

অবশেষে জামিনে কারামুক্ত মিন্নি

বরগুনায় আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি অবশেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষে মিন্নি জামিনে মুক্তি পান।

বরগুনার নিম্ন আদালতে দু’দফায় জামিনের আবেদন নামঞ্জুরের পর হাইকোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন মিন্নি।

হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের ওপর সোমবার শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালতের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি (নো অর্ডার)। ফলে হাইকোর্টের ওই আদেশ বহাল রইল ও মিন্নির কারামুক্তিতে কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

মিন্নির জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত বৃহস্পতিবার রায় দেয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলা ও বাবার (মোজাম্মেল হোসেন কিশোর) জিম্মায় থাকার শর্তে মিন্নিকে জামিন দেওয়া হয়।

গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের রাস্তায় স্বামী রিফাতের হামলাকারীদের ঠেকাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরদিন ১২ জনকে আসামি করে রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফের করা মামলায় মিন্নি ছিলেন প্রধান সাক্ষী। এরই মধ্যে এ হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।

এরপর হত্যাকাণ্ডে পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে রিফাতের বাবা অভিযোগ করেন, মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের সম্পর্ক ছিল এবং তাদের বিয়েও হয়েছিল। পরে কলেজছাত্রী মিন্নিকে গত ১৬ জুলাই সকালে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরদিন আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ডের তৃতীয় দিনে ১৯ জুলাই পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানান, মিন্নি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তার আগের দিন পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মিন্নি হত্যাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং হত্যা পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নির যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।’ তবে মিন্নির বাবা দাবি করেন, জবরদস্তি ও তড়িঘড়ি করে তার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির গত রবিবার বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে ২৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন; সেখানে মিন্নির নাম রাখা হয়েছে আসামির তালিকার ৭ নম্বরে।